Dhaka ০৬:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রতিদিন বিষ খেয়ে মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করছি আমরা 

 

 

একজন লোক সকালে ঘুম থেকে উঠে সর্বপ্রথম যে পণ্যটি ব্যবহার করে তাহলো টুথপেস্ট। এতে রয়েছে বিষাক্ত কেমিক্যাল ও ভেজালে ভরা। এতে নাকি যে কেমিক্যাল মেশানো থাকে তাতে ক্যান্সারের মতো রোগ হওয়া স্বাভাবিক। এরপর সকালে নাস্তা পড়াটা ডিম আটায় ভেজাল তাতে কেমিক্যাল মেশানো বর্তমানে ডিমে ও ভেজাল শুরু হয়ে গেছে। আটা ময়দায় মেশানো কেমিক্যাল জীবন বিপন্ন করে। নাস্তা শেষে একটা কলা, কলায় যে পরিমাণ রাসায়নিক কেমিক্যাল মেশানো থাকে তাতে কলা খেলে মৃত্যুকে মেনে নিতে হবে অল্প বয়সেই। তারপর এসিডিটি তো আছেই।

এরপর এক কাপ চা অথবা কফি। কফি বানানো হয় তেতুলের বিচি বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে। যা দেখলে আপনার কপালে ভাজ পড়ে যাবে। চা পাতা নাকি মরা মানুষের কফিনের বাক্স থেকে আনা। এতে মনে হয় মৃত্যুর আগেই মরা।

শাকসবজি কিনতে বাজারে গেলে টাটকা টাটকা মনে হয় সেখানেও বিষাক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া সবেই হাইব্রিড।তাজা রাখার জন্য মেশানো হয় ফরমালিন।

ফিরে গেলেন মসলার বাজারে হলুদ মরিচ ধনিয়া গুঁড়ো, যাই কিনলেন এর মধ্যে রয়েছে বিষাক্ত সীসা ও কেমিক্যাল পা দিয়ে মারাচ্ছে মসলা এসবই খাওয়ার অনুপযোগী।

এরপর সয়াবিন তেল ও সরিষার তেল তো লাগবেই। সয়াবিন তেল কিনতে হয় পামওয়েল বিষাক্ত কেমিক্যালে ভরা সবটুকু। সরিষার তেল বানানো হয় বিভিন্ন কেমিক্যাল দিয়ে যা মানব দেহের প্রচণ্ড ক্ষতি করে।

চলে এলেন মাছের বাজারে মাছ তাজা রাখার জন্য মেশানো হয় ফরমালিন বা বিষাক্ত কেমিক্যাল যা পাঁচ বছরেও মাছ নষ্ট হবে না। মাছ না কিনে চলে গেলেন মুরগির বাজারে। সেখানে বয়লারের বিকল্প নেই। বিষাক্ত ইনজেকশন দিয়ে ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই এক একটি বয়লার মুরগি হয়ে ওঠে দের দুই কেজিতে। এবং তাদের যে খাবার খাওয়ানো হয় তা বিষাক্ত পোল্ট্রি ফিড নামে পরিচিত। যা প্রতিনিয়ত খেলে মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে সময় লাগে না বেশিদিন।

এরপর গেলেন লবণ আর চিনি কিনতে সেখানে বিষাক্ত ফসফরাস দিয়ে সাদা ধবধবে এবং ঝরঝরা করে রাখা হয়েছে চিনি এবং লবণ।

এরপর প্রচন্ড গরমের মধ্যে গেলেন ফলের দোকানে সেখানে তরমুজে মেশানো হয় পটাশিয়াম ম্যাগনেট। ইনজেকশন দিয়ে তরমুজ এবং বাঙ্গির মধ্যে এসব কেমিক্যাল মিশিয়ে লাল টকটকে এবং মিষ্টান্ন করা হয়। এটা মানব দেহের ব্রেইন ড্যামেজ করে ফেলে। এমন কি ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তি লোপ পায়। ফল মূলে ও ব্যবহার করা হয় পটাশিয়াম ম্যাগনেট তাইতো ভেজালের রাজ্যে অসহায়ের মতো যুদ্ধ করে চলছি আমরা।

এরপর মিষ্টির দোকানে জিলাপি বা আমেরতিতে মেশানো হয় কাপড়ে দেওয়া ডাইস বা রং যা মানব দেহের পাকিস্থলীতে আঘাত করে এবং দ্রুত ক্যান্সারের দিকে অগ্রসর হয়।শিশু খাদ্যে খুরমার মধ্যে মিশানো হয় কাপড় দেওয়া রং। তাছাড়া রসগোল্লা সন্দেশ বা অন্যান্য মিষ্টিতে ব্যবহার হয় না ন্যাচারাল গরুর দুধ। যেটুকু ব্যবহার হয় সেখানেও গাভীকে ইনজেকশন দিয়ে অতিরিক্ত দুধ বের করে এমনও প্রমাণ পাওয়া যায়। চানাচুর খাচ্ছেন না কাপড়ের রং বলা দুষ্কর।

প্রতিটি মানুষের জীবনে একটি সময় আসে পারফিউম পাগল থাকে মানুষ। পারফিউমে যে বিষাক্ত কেমিক্যাল এবং অন্যান্য মেটারিয়াল দিয়ে তৈরি করা হয় তা দেখলে কপাল ভাঁজ হয়ে যাবে। আর কেউ পারফিউম ব্যবহার করতে চাইবেন না। সাধারণ সাবান স্নো পাউডার যা দিয়ে তৈরি করা হয় তা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলি। মুখের ক্রিমটি পর্যন্ত বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি। যা ধীরে ধীরে ক্যান্সারের দিকে নিয়ে যায়।

ভেজালের কথা কি আর বলবো ডাল পুরিতে নেই ডাল। পিয়াজু তে সামান্য পিয়াজ থাকলেও শক্ত করার কেমিক্যাল দিয়ে ইটের মত শক্ত করে পিয়াজু। ভেজাল খেয়ে পেট ভরে এখন যাবেন ডাক্তারের চেম্বারে।

ঔষধ রোগ প্রতিশোধক হলেও নিয়মিত মরণবেদিতে আক্রান্ত করে আমাদের জীবন। ট্যাবলেট খাচ্ছি না আটার দলা বুঝিনা। প্রেসার হার্ট অ্যাটাকে প্রতিশোধক যে ঔষধ আমরা প্রতিনিয়ত খাই তাতে কোন কাজ হচ্ছে না। গ্যাস্ট্রিকের বরি অথবা নাপা নামের ট্যাবলেটে ও ভেজালের শেষ নেই। রোগ নিরাময় তো হচ্ছেই না বরং কিছুদিনের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে রোগিটি।ছিরাপ নামের যে শব্দগুলি ব্যবহার হয় সেখানে বোতলে ভরা হয় চিনির পানি আর কেমিক্যাল। আসলে আমরা ভেজাল এবং দুর্নীতির মধ্যে এমন ভাবে আটকে আছি এ থেকে বাচার যেন মৃত্যুই একমাত্র উপায়।

আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা কি মানুষ মারার কন্টাক্ট নিলো কিনা জানতে ইচ্ছে হয়। সারা পৃথিবীতে এরকম জঘন্য ভেজালে ভরা দেশ আছে কিনা জানিনা। আমাদের দেশের রাষ্ট্র এবং সরকারি কর্মকর্তারা এসবের কোন খেয়াল রাখেন না। মানুষ যত বেশি অসুস্থ হয় মনে হয় তাদের আনন্দ তত বেশি।

আর আমরা সাধারণ মানুষ প্রতিদিন বিষ খেয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে সব হারিয়ে অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ি।

এখন দেখছি মানুষের ঈমানে ও ভেজাল। তাই ভেজাল থেকে পরিত্রান পাওয়া অত্যন্ত দুষ্কর। তাইতো ভেজাল খেয়ে, ভেজালের সাথে জীবনে যুদ্ধ করা ছাড়া আমাদের আর উপায় কি?

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

শেরপুরে জমি বেদখলের চেষ্টা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ

প্রতিদিন বিষ খেয়ে মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করছি আমরা 

Update Time : ০৪:১৭:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

 

 

একজন লোক সকালে ঘুম থেকে উঠে সর্বপ্রথম যে পণ্যটি ব্যবহার করে তাহলো টুথপেস্ট। এতে রয়েছে বিষাক্ত কেমিক্যাল ও ভেজালে ভরা। এতে নাকি যে কেমিক্যাল মেশানো থাকে তাতে ক্যান্সারের মতো রোগ হওয়া স্বাভাবিক। এরপর সকালে নাস্তা পড়াটা ডিম আটায় ভেজাল তাতে কেমিক্যাল মেশানো বর্তমানে ডিমে ও ভেজাল শুরু হয়ে গেছে। আটা ময়দায় মেশানো কেমিক্যাল জীবন বিপন্ন করে। নাস্তা শেষে একটা কলা, কলায় যে পরিমাণ রাসায়নিক কেমিক্যাল মেশানো থাকে তাতে কলা খেলে মৃত্যুকে মেনে নিতে হবে অল্প বয়সেই। তারপর এসিডিটি তো আছেই।

এরপর এক কাপ চা অথবা কফি। কফি বানানো হয় তেতুলের বিচি বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে। যা দেখলে আপনার কপালে ভাজ পড়ে যাবে। চা পাতা নাকি মরা মানুষের কফিনের বাক্স থেকে আনা। এতে মনে হয় মৃত্যুর আগেই মরা।

শাকসবজি কিনতে বাজারে গেলে টাটকা টাটকা মনে হয় সেখানেও বিষাক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া সবেই হাইব্রিড।তাজা রাখার জন্য মেশানো হয় ফরমালিন।

ফিরে গেলেন মসলার বাজারে হলুদ মরিচ ধনিয়া গুঁড়ো, যাই কিনলেন এর মধ্যে রয়েছে বিষাক্ত সীসা ও কেমিক্যাল পা দিয়ে মারাচ্ছে মসলা এসবই খাওয়ার অনুপযোগী।

এরপর সয়াবিন তেল ও সরিষার তেল তো লাগবেই। সয়াবিন তেল কিনতে হয় পামওয়েল বিষাক্ত কেমিক্যালে ভরা সবটুকু। সরিষার তেল বানানো হয় বিভিন্ন কেমিক্যাল দিয়ে যা মানব দেহের প্রচণ্ড ক্ষতি করে।

চলে এলেন মাছের বাজারে মাছ তাজা রাখার জন্য মেশানো হয় ফরমালিন বা বিষাক্ত কেমিক্যাল যা পাঁচ বছরেও মাছ নষ্ট হবে না। মাছ না কিনে চলে গেলেন মুরগির বাজারে। সেখানে বয়লারের বিকল্প নেই। বিষাক্ত ইনজেকশন দিয়ে ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই এক একটি বয়লার মুরগি হয়ে ওঠে দের দুই কেজিতে। এবং তাদের যে খাবার খাওয়ানো হয় তা বিষাক্ত পোল্ট্রি ফিড নামে পরিচিত। যা প্রতিনিয়ত খেলে মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে সময় লাগে না বেশিদিন।

এরপর গেলেন লবণ আর চিনি কিনতে সেখানে বিষাক্ত ফসফরাস দিয়ে সাদা ধবধবে এবং ঝরঝরা করে রাখা হয়েছে চিনি এবং লবণ।

এরপর প্রচন্ড গরমের মধ্যে গেলেন ফলের দোকানে সেখানে তরমুজে মেশানো হয় পটাশিয়াম ম্যাগনেট। ইনজেকশন দিয়ে তরমুজ এবং বাঙ্গির মধ্যে এসব কেমিক্যাল মিশিয়ে লাল টকটকে এবং মিষ্টান্ন করা হয়। এটা মানব দেহের ব্রেইন ড্যামেজ করে ফেলে। এমন কি ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তি লোপ পায়। ফল মূলে ও ব্যবহার করা হয় পটাশিয়াম ম্যাগনেট তাইতো ভেজালের রাজ্যে অসহায়ের মতো যুদ্ধ করে চলছি আমরা।

এরপর মিষ্টির দোকানে জিলাপি বা আমেরতিতে মেশানো হয় কাপড়ে দেওয়া ডাইস বা রং যা মানব দেহের পাকিস্থলীতে আঘাত করে এবং দ্রুত ক্যান্সারের দিকে অগ্রসর হয়।শিশু খাদ্যে খুরমার মধ্যে মিশানো হয় কাপড় দেওয়া রং। তাছাড়া রসগোল্লা সন্দেশ বা অন্যান্য মিষ্টিতে ব্যবহার হয় না ন্যাচারাল গরুর দুধ। যেটুকু ব্যবহার হয় সেখানেও গাভীকে ইনজেকশন দিয়ে অতিরিক্ত দুধ বের করে এমনও প্রমাণ পাওয়া যায়। চানাচুর খাচ্ছেন না কাপড়ের রং বলা দুষ্কর।

প্রতিটি মানুষের জীবনে একটি সময় আসে পারফিউম পাগল থাকে মানুষ। পারফিউমে যে বিষাক্ত কেমিক্যাল এবং অন্যান্য মেটারিয়াল দিয়ে তৈরি করা হয় তা দেখলে কপাল ভাঁজ হয়ে যাবে। আর কেউ পারফিউম ব্যবহার করতে চাইবেন না। সাধারণ সাবান স্নো পাউডার যা দিয়ে তৈরি করা হয় তা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলি। মুখের ক্রিমটি পর্যন্ত বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি। যা ধীরে ধীরে ক্যান্সারের দিকে নিয়ে যায়।

ভেজালের কথা কি আর বলবো ডাল পুরিতে নেই ডাল। পিয়াজু তে সামান্য পিয়াজ থাকলেও শক্ত করার কেমিক্যাল দিয়ে ইটের মত শক্ত করে পিয়াজু। ভেজাল খেয়ে পেট ভরে এখন যাবেন ডাক্তারের চেম্বারে।

ঔষধ রোগ প্রতিশোধক হলেও নিয়মিত মরণবেদিতে আক্রান্ত করে আমাদের জীবন। ট্যাবলেট খাচ্ছি না আটার দলা বুঝিনা। প্রেসার হার্ট অ্যাটাকে প্রতিশোধক যে ঔষধ আমরা প্রতিনিয়ত খাই তাতে কোন কাজ হচ্ছে না। গ্যাস্ট্রিকের বরি অথবা নাপা নামের ট্যাবলেটে ও ভেজালের শেষ নেই। রোগ নিরাময় তো হচ্ছেই না বরং কিছুদিনের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে রোগিটি।ছিরাপ নামের যে শব্দগুলি ব্যবহার হয় সেখানে বোতলে ভরা হয় চিনির পানি আর কেমিক্যাল। আসলে আমরা ভেজাল এবং দুর্নীতির মধ্যে এমন ভাবে আটকে আছি এ থেকে বাচার যেন মৃত্যুই একমাত্র উপায়।

আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা কি মানুষ মারার কন্টাক্ট নিলো কিনা জানতে ইচ্ছে হয়। সারা পৃথিবীতে এরকম জঘন্য ভেজালে ভরা দেশ আছে কিনা জানিনা। আমাদের দেশের রাষ্ট্র এবং সরকারি কর্মকর্তারা এসবের কোন খেয়াল রাখেন না। মানুষ যত বেশি অসুস্থ হয় মনে হয় তাদের আনন্দ তত বেশি।

আর আমরা সাধারণ মানুষ প্রতিদিন বিষ খেয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে সব হারিয়ে অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ি।

এখন দেখছি মানুষের ঈমানে ও ভেজাল। তাই ভেজাল থেকে পরিত্রান পাওয়া অত্যন্ত দুষ্কর। তাইতো ভেজাল খেয়ে, ভেজালের সাথে জীবনে যুদ্ধ করা ছাড়া আমাদের আর উপায় কি?