॥ ডাক্তার ডিগ্রী ব্যবহারকারী ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে গাজীপুরে তেমন কোনো কার্যকর অভিযান নেই বললেই চলে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সতর্কবার্তা দিয়েই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়। অলিগলিতে বসে থাকা ভুয়া ডিগ্রী ব্যবহারকারী চিকিৎসকের প্রতারণায় পরে নিরীহ মানুষ। বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) সনদপ্রাপ্ত ডাক্তারদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়ে ওঠে না। স্বীকৃত প্রোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রী না থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসকদের কেউ কেউ নিজেকে ‘বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন যা বিএমডিসি আইনের পরিপন্থী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সাইনবোর্ড, প্রেসক্রিপশন প্যাড, ভিজিটিং কার্ড ইত্যাদিতে ‘বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক’ লেখা দেখে চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রত্যাশিত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। শুধু তাই নয়, আইন অমান্য করে কোন কোন চিকিৎসক তাদের ব্যবস্থাপত্রে এমন কিছু ওষুধ লিখছেন, যা সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ। ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রীপ্রাপ্ত না হয়েও অনেকে তাদের নামের পূর্বে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করে যাচ্ছেন। এমন তথ্য পাওয়া যায় গাজীপুর জেলা, কালিয়াকৈর উপজেলার ,সফিপুর বাজার সংলগ্ন রাখালিয়ারচালা, মৌচাক, লালমনিরহাট মেডিকেল হল, সেখানে চিকিৎসা প্রদান করেন ভূয়া ডাঃ মোঃ নূর হোসেন,ডি.এম.পি.এ (ঢাকা)এম.এইচ.জি.(ঢাক)
দেশের সর্বত্র চলছে বিএমডিসির দেয়া এমন সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি অমান্য করার প্রতিযোগিতা। এতে একদিকে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা হয়ে পড়ছে প্রশ্নবিদ্ধ, অন্যদিকে ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে রোগীরা অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন অনেক রোগী। রোগী ও তাদের স্বজনরা পড়ছেন আর্থিক ক্ষতিতে। বিএমডিসি আইনের কিছু অংশ উল্লেখ করে চিকিৎসকদের বারবার সতর্ক করে দেয় বিএমডিসি। বিএমডিসি’র সতর্কীকরণ বার্তায় বলা হয়, স্বীকৃত ডিগ্রীপ্রাপ্ত অনেকে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের নিবন্ধন ব্যতীত চিকিৎসা কার্য পরিচালনা করছেন। কোন কোন নিবন্ধিত চিকিৎসক/দন্ত চিকিৎসক তাদের সাইনবোর্ড, প্রেসক্রিপশন প্যাড, ভিজিটিং কার্ড ইত্যাদিতে, পিজিটি, এফসিপিএস (পার্ট-১,২), এমডি (ইন কোর্স, পার্ট-১,২, থিসিস পর্ব), এম,এস (পার্ট-১, ২, থিসিস পর্ব, সিসি) ইত্যাদি ব্যবহার করছেন, যা কোন স্বীকৃত অতিরিক্ত চিকিৎসা যোগ্যতা নয়। তাছাড়া স্বীকৃত পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রী না থাকা সত্ত্বেও কেউ কেউ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সার্জারি বিশেষজ্ঞ, গাইনী বিশেষজ্ঞ, শিশু বিশেষজ্ঞ, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ইত্যাদি ব্যবহার করছেন, যা বিএমডিসি আইনের পরিপন্থী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আবার কোন কোন চিকিৎসক তাদের ব্যবস্থাপত্রে এমন কিছু ওষুধ লিখছেন, যা নিষিদ্ধ। ২২(১) ধারা অনুযায়ী নিবন্ধন ব্যতীত এলোপ্যাথি চিকিৎসা নিষিদ্ধ। অন্য কোন আইনে যা, কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীনে নিবন্ধন ব্যতীত কোন মেডিক্যাল চিকিৎসক বা ডেন্টাল চিকিৎসক এলোপ্যাথি চিকিৎসা করতে, অথবা নিজেকে মেডিক্যাল চিকিৎসক বা, ক্ষেত্রমত, ডেন্টাল চিকিৎসক বলে পরিচয় প্রদান করতে পারবেন না। কোন ব্যক্তি এই ধারা লংঘন করলে উক্ত লংঘন হবে একটি অপরাধ এবং তার জন্য তিনি ৩ বছর কারাদ- অথবা ১ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদ- অথবা উভয় দন্ড-নীয় হবেন। ২৯(১) ধারা অনুযায়ী ভুয়া পদবি, ইত্যাদি ব্যবহার নিষিদ্ধ। এই আইনের অধীন নিবন্ধনকৃত কোন মেডিক্যাল চিকিৎসক বা ডেন্টাল চিকিৎসক এমন কোন নাম, পদবী, বিবরণ বা প্রতীক এমনভাবে ব্যবহার বা প্রকাশ করবেন , যার ফলে তার কোন অতিরিক্ত পেশাগত যোগ্যতা আছে মর্মে কেউ মনে করেন। ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রীপ্রাপ্তরা ব্যতীত অন্য কেউ তাদের নামের পূর্বে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারিবে না। কোন ব্যক্তি এই উপধারা লঙ্ঘন করলে উক্ত লঙ্ঘন হবে একটি অপরাধ এবং তার জন্য তিনি ৩ বছর কারাদ- বা ১ লাখ টাকা অর্থ দ- অথবা উভয় দ-ে দ-নীয় হবেন এবং উক্ত অপরাধ অব্যাহত থাকলে প্রত্যেকবার তার পুনরাবৃত্তির জন্য অন্যূন ৫০ হাজার টাকা অর্থ দ-ের অতিরিক্ত হিসেবে দ-নীয় হবেন। এদিকে, দেশের সর্বত্র চলছে বিএমডিসি আইনের লঙ্ঘন। স্বীকৃত চিকিৎসা থেকে ডাক্তার হয়েও অনেকে ভুয়া ডিগ্রী ব্যবহার করে থাকেন। নামের আগে ভুয়া ডিগ্রী লাগিয়ে রোগীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করাই এ ধরনের চিকিৎসকদের মূল উদ্দেশ্য। রোগীদের ভাল-মন্দ বিবেচনায় রাখেন না তাঁরা। মহান পেশা চিকিৎসাসেবা তাদের কাছে হয়ে ওঠে ‘রোগী মেরে টাকা উপার্জনের সেন্টার’। স্বীকৃত চিকিৎসকদের পাশাপাশি অস্বীকৃত কোয়াক চিকিৎসকদের সংখ্যাও কম নয়। তারা চিকিৎসা সেক্টরের জন্য বেশ হুমকিস্বরূপ। দেশে রয়েছে প্রায় আড়াই লাখ ‘কোয়াক চিকিৎসক’। এ ধরনের চিকিৎসকদের থাকে না কোন প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রী ও অভিজ্ঞতা। কোন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান বা অভিজ্ঞ ব্যক্তির সংস্পর্শে এসে তারা কিছু চিকিৎসা জ্ঞান অর্জন করে। সেই সীমিত জ্ঞান দিয়ে তারা নিজেদের মতো করে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যায়। এতে অনেক রোগী ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। সরকারী অনুমোদন না থাকলেও এ ধরনের চিকিৎসকরা দেশের আনাচে কানাচে চিকিৎসা-বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ধরনের চিকিৎসকেরা প্রাইভেট মেডিক্যাল প্র্যাক্টিশনার্সের মধ্যেও পড়ে না বলে জানা যায়।
এমন তথ্যের ভিত্তিতে মুঠোফোনের কথা হয় মোঃ নুরুল হোসেন এর সাথে সাংবাদিকদের বলেন আমি এখানে বিগত ১৫ বছর যাবত চিকিৎসা দিয়ে আসছি। দেশের স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন আইন, বিধি, ও নীতিমালা অনুযায়ী নামের আগে ডাঃ লেখাটা সঠিক আছে কিনা। এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি (না) বলে ফোনটি কেটে দেন।
পরবর্তীতে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে মুঠো ফোনে ফোন দিয়ে মোঃ নূর হোসেনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন।
মাঝেমধ্যে মোবাইল কোড পরিচালনা করলেও কিছু অগোচরে থেকে যায়। বিষয়টা দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন।