Dhaka ০৩:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কাশিমপুর ভূমি অফিসের অভিযোগের শেষ নেই 

  • এম এস রহমান 
  • Update Time : ০২:৩৪:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
  • ৭৬ Time View

 

 

 

বিগত দিনে ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর না হওয়ায় সারদেশের ভূমি অফিসগুলো দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ভূমি উন্নয়ন করসহ অন্যান্য খাতের আদায় হওয়া অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে অবাধে। সাব রেজিস্ট্রার ও এসি ল্যান্ড অফিসে জালিয়াতি করে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করে জমির মালিকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। উচ্চমানের আবাসিক, বাণিজ্যিক শ্রেণির জমিকে ‘নাল’ ‘ডোবা’ দেখানো হচ্ছে। এতে সরকার প্রতিবছর মোটা অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

একেই চিত্র দেখা যাচ্ছে কাশিমপুর ভূমি অফিসে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট ভূমি সহকারী কর্মকর্তা শুরু করে  অফিসের পিয়ন, ঘুষ-দুর্নীতির ‘রসের হাঁড়িতে’ মজে অনিয়মকে রূপ দিয়েছেন নিয়মে! আর এতে করে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ।এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী লোকজন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করলেও কোন ফল হয় না। স্থানীয় প্রশাসনও দুর্নীতির দুষ্টচক্রের পক্ষেই উল্টো সাফাই গান, এমন নেতিবাচক নজিরও তাদের ফেলে দিয়েছে প্রশ্নের মুখে।স্থানীয় ভূমি মালিকরা জানান, জমির বৈধ মালিক যেই হোক, দালালদের চাহিদা মতো টাকা এবং দাগ খতিয়ান নম্বর দিলেই তা হয়ে যায় অন্যের। আবার বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও ঘুষে হেরফের হলে প্রকৃত জমির মালিকদের নানা হয়রানির শিকার হতে হয়। এসব দালাল সরকারি কর্মচারীর মতো বিভিন্ন রেকর্ডপত্র নাড়াচাড়া করে। দালালরা ভুল ও মিথ্যা তথ্য সংযোজন করে ফের তা ঠিক করে দেওয়ার জন্য সংশি­ষ্ট ভূমি মালিকের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় হাজার হাজার টাকা। এদের বিরুদ্ধে কথা বললে জমি নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়।

এমনকি সরকারি সম্পত্তি তদারকিতে গরমিল ।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরের দক্ষিণ পানিশাইল মৌজার ১নং খতিয়ানভুক্ত আরএস-২০৬ দাগে চালা জমি ২০ শতাংশ এবং ২০৭ নং দাগে পুকুরের জমি ৬২ শতাংশসহ মোট ৮২ শতাংশ সরকারি খাস জমি রয়েছে।ওই জমিতে গড়ে উঠেছে বহু সংখ্যক দোকান ঘর,বাড়ী, মার্কেটসহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা।বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর ওই জমিতে সরকারি মালিকানা সাইনবোর্ড দেয়া হয়।তবে দখলকারীরা সাইনবোর্ড ফেলে নির্বিগ্নে চালাচ্ছে যাচ্ছে তাদের নির্মাণ কাজ। খাস জমি দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে দোকান।

স্থানীয়রা জানান, ভূমি অফিসে অসাধু কিছু কর্মকর্তাদের কারণে মাছিহাতা সোয়েটার্স লিমিটেডের সামনে থেকে শুরু হয়ে চক্রবর্তী পর্যন্ত বিস্তৃত ৪০ ফিট প্রশস্ত খালটি বিলিন হয়েছে বহু বছর ধরে পানি নিষ্কাশনের প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। এই খালটি পূর্বে তিনটি প্রতিষ্ঠান—পলাশ হাউজিং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক প্রকল্প এবং সোনালী পল্লী—ত্রিমুখী দলিলের মাধ্যমে খাল হিসেবে জনসাধারণের খাল হিসাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

অনুসন্ধানে জানা যায় দ়ক্ষিন পানিশাইল মৌজায় এসে এ খতিয়ানের ৭৮.৭৯আর এস খতিয়ান নং১২২.২০০/ এস এ ১৬৪.১৬৩.১৬২.১৬১.১৬০.১৫৭.১৫৫.১৫৬.১৫৪.১৫৩.১৫২.১৪৪.১৫১.১৫০.১৪৯.১৪৮.১৪৭.১৩৮.১৪০.১৪৫.১৪৬.১৪৩.১৪১.১৩৭.১৩৩.১৩৬.১৩৪.১৩২.১৩১.১৩০.১২৯ উল্লেখিত দাগের এসে এ ৩১টি নাল জমি ২৯.৬০ একর পশ্চিম পাশে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য সম্পত্তির ৪.৯৫ একর বরাদ্দ করা হয়েছে রাস্তা ড্রেস ও বৈদ্যুতিক খুঁটির জন্য উল্লেখিত সম্পত্তি ৪০ ফিট বরাদ্দ দেয়া হয়।প্রায় দুই কিলোমিটার খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে বাড়িঘর ও পাকা স্থাপনা। প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন ঘটনা ঘটলেও এ ব্যাপারে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এতে খালের স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে চরম বিপদে পড়েছেন। খাল দখলের কারণে পানি প্রবাহিত না হতে পারায় পানি জমে পঁচা দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, যা পরিবেশকে মারাত্মকভাবে দূষিত করছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

শেরপুরে জমি বেদখলের চেষ্টা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ

কাশিমপুর ভূমি অফিসের অভিযোগের শেষ নেই 

Update Time : ০২:৩৪:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

 

 

 

বিগত দিনে ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর না হওয়ায় সারদেশের ভূমি অফিসগুলো দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ভূমি উন্নয়ন করসহ অন্যান্য খাতের আদায় হওয়া অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে অবাধে। সাব রেজিস্ট্রার ও এসি ল্যান্ড অফিসে জালিয়াতি করে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করে জমির মালিকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। উচ্চমানের আবাসিক, বাণিজ্যিক শ্রেণির জমিকে ‘নাল’ ‘ডোবা’ দেখানো হচ্ছে। এতে সরকার প্রতিবছর মোটা অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

একেই চিত্র দেখা যাচ্ছে কাশিমপুর ভূমি অফিসে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট ভূমি সহকারী কর্মকর্তা শুরু করে  অফিসের পিয়ন, ঘুষ-দুর্নীতির ‘রসের হাঁড়িতে’ মজে অনিয়মকে রূপ দিয়েছেন নিয়মে! আর এতে করে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ।এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী লোকজন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করলেও কোন ফল হয় না। স্থানীয় প্রশাসনও দুর্নীতির দুষ্টচক্রের পক্ষেই উল্টো সাফাই গান, এমন নেতিবাচক নজিরও তাদের ফেলে দিয়েছে প্রশ্নের মুখে।স্থানীয় ভূমি মালিকরা জানান, জমির বৈধ মালিক যেই হোক, দালালদের চাহিদা মতো টাকা এবং দাগ খতিয়ান নম্বর দিলেই তা হয়ে যায় অন্যের। আবার বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও ঘুষে হেরফের হলে প্রকৃত জমির মালিকদের নানা হয়রানির শিকার হতে হয়। এসব দালাল সরকারি কর্মচারীর মতো বিভিন্ন রেকর্ডপত্র নাড়াচাড়া করে। দালালরা ভুল ও মিথ্যা তথ্য সংযোজন করে ফের তা ঠিক করে দেওয়ার জন্য সংশি­ষ্ট ভূমি মালিকের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় হাজার হাজার টাকা। এদের বিরুদ্ধে কথা বললে জমি নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়।

এমনকি সরকারি সম্পত্তি তদারকিতে গরমিল ।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরের দক্ষিণ পানিশাইল মৌজার ১নং খতিয়ানভুক্ত আরএস-২০৬ দাগে চালা জমি ২০ শতাংশ এবং ২০৭ নং দাগে পুকুরের জমি ৬২ শতাংশসহ মোট ৮২ শতাংশ সরকারি খাস জমি রয়েছে।ওই জমিতে গড়ে উঠেছে বহু সংখ্যক দোকান ঘর,বাড়ী, মার্কেটসহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা।বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর ওই জমিতে সরকারি মালিকানা সাইনবোর্ড দেয়া হয়।তবে দখলকারীরা সাইনবোর্ড ফেলে নির্বিগ্নে চালাচ্ছে যাচ্ছে তাদের নির্মাণ কাজ। খাস জমি দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে দোকান।

স্থানীয়রা জানান, ভূমি অফিসে অসাধু কিছু কর্মকর্তাদের কারণে মাছিহাতা সোয়েটার্স লিমিটেডের সামনে থেকে শুরু হয়ে চক্রবর্তী পর্যন্ত বিস্তৃত ৪০ ফিট প্রশস্ত খালটি বিলিন হয়েছে বহু বছর ধরে পানি নিষ্কাশনের প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। এই খালটি পূর্বে তিনটি প্রতিষ্ঠান—পলাশ হাউজিং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক প্রকল্প এবং সোনালী পল্লী—ত্রিমুখী দলিলের মাধ্যমে খাল হিসেবে জনসাধারণের খাল হিসাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

অনুসন্ধানে জানা যায় দ়ক্ষিন পানিশাইল মৌজায় এসে এ খতিয়ানের ৭৮.৭৯আর এস খতিয়ান নং১২২.২০০/ এস এ ১৬৪.১৬৩.১৬২.১৬১.১৬০.১৫৭.১৫৫.১৫৬.১৫৪.১৫৩.১৫২.১৪৪.১৫১.১৫০.১৪৯.১৪৮.১৪৭.১৩৮.১৪০.১৪৫.১৪৬.১৪৩.১৪১.১৩৭.১৩৩.১৩৬.১৩৪.১৩২.১৩১.১৩০.১২৯ উল্লেখিত দাগের এসে এ ৩১টি নাল জমি ২৯.৬০ একর পশ্চিম পাশে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য সম্পত্তির ৪.৯৫ একর বরাদ্দ করা হয়েছে রাস্তা ড্রেস ও বৈদ্যুতিক খুঁটির জন্য উল্লেখিত সম্পত্তি ৪০ ফিট বরাদ্দ দেয়া হয়।প্রায় দুই কিলোমিটার খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে বাড়িঘর ও পাকা স্থাপনা। প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন ঘটনা ঘটলেও এ ব্যাপারে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এতে খালের স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে চরম বিপদে পড়েছেন। খাল দখলের কারণে পানি প্রবাহিত না হতে পারায় পানি জমে পঁচা দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, যা পরিবেশকে মারাত্মকভাবে দূষিত করছে।