Dhaka ০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অ্যাটর্নি জেনারেল  মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ  আইনজীবী এবং রাজনৈতিক কর্মী 

 

 

০২ আগস্ট, ২০২৫।

মাধবী,

তোমাকে না দেখার সাধ মিটাবো কি করে? তুমি দিনে দিনে আমার দৃষ্টির সীমানা পেরোচ্ছো, আমার অধরা হয়ে নিমিষে মিলাও, আমার কল্পনার অলিন্দেই শুধু উপেক্ষার প্রহর বুনো! এভাবে কতটা রক্তক্ষরণ হয় জানো? গত ২৪ জুলাই, ২০২৫ তারিখ, বৃহস্পতিবার , ঢাকা থেকে যুক্তরাজ্যে আসার সময় মনে হয়েছিলো তোমার শহরে তোমার জন‍্য বিশুদ্ধ বাতাস রেখে গেলাম। টার্কিশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি প্রায় দুই ঘন্টার মতো দেরীতে উড়াল দেয়, প্রতিটি মূহুর্তেই তোমার জন‍্য রাশি রাশি স্বাধীনতার ফুল ছড়িয়েছিলাম, বিশুদ্ধতার সুবাস রেখেছিলাম, সুশোভন এক শহরের উপপাদ্য রেখে এসেছিলাম। ঢাকা থেকে দেরীতে ফ্লাইট ছাড়ার কারনে ইস্তাম্বুলে কানেকটিং ফ্লাইট মিস করেছিলাম, ইস্তাম্বুল থেকে বার্মিংহামের পরবর্তী ফ্লাইট প্রায় ২০ ঘন্টা পরে ছিলো। অগত‍্যা ৫ ঘন্টা পর লন্ডনের ফ্লাইট ধরলাম। রাত নয়টা নাগাদ পৌঁছলাম লন্ডনের হিথ্রো বিমান বন্দরে, বের হওয়ার পর স্নেহের তুহিন এবং শাহীনকে পেলাম, ওরা দুই ভাই, আমাদের প্রিয় শিক্ষক ফরিদ স‍্যারের দুইজন সুযোগ্য পুত্র। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তুহিনের বাসায় গেলাম, যেতে দেখি তুহিনের বৌ লিপি, আমার অনেক পছন্দের মানুষ, আতিথেয়তায় অনন্যা, অদ্বিতীয়া, দেশী স্টাইলে সব রান্না করে টেবিল সাজিয়ে রেখেছে। সবগুলো খাবারই এতটাই লোভনীয় ছিলো যে, গোগ্রাসে খেয়ে ফেললাম। এরপর ঐ রাতেই শাহীন-তুহিনকে সঙ্গে নিয়ে নটিংহাম শহরে এসে যখন পৌঁছায় তখন ঘড়ির কাঁটায় ২টা নয় মিনিট! এতো হৈ রৈ, এত সমারোহের মাঝেও তুমি অনন্য মাধবী হয়ে আমার কল্পনায় গ্রীবা উঁচু করে চারিদিকে ঘুরে ঘুরে প্রণতি জানিয়েছো। এবারের ভ্রমনে উত্তর ওয়েলস এর লনডুনডু শহরে সোহাগ-টফি দম্পতির আন্তরিক অভ‍্যর্থনা, ওদের বাচ্চাদের সাহচার্য আর শাওন সাহেবের উইটি আলোচনা আমার সময়কে আনন্দময় করে তুলেছিল! সব কিছুর মাঝেই তুমি এসেছিলে আমার স্বপ্ন সারথী হয়ে! এতোটা জ্বালাও কেনো মাধবী? মায়া লাগে না তোমার? পিশাচও তো মাঝে মাঝে মানবী হয়, তুমিও তো কোন এক নিরালা দুপুর কিংবা রাত্রি দ্বিপ্রহরে হতে পারো প্রেমের দেবী, পারো না তুমি?

 

মাধবী,

আগামীকাল বাংলাদেশের ইতিহাসে মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে একজন ফ‍্যাসিস্ট এবং তাঁর প্রধানতম সহযোগীদের ঐতিহাসিক বিচার শুরু হতে যাচ্ছে। নিঃসন্দেহে এই বিচার ইতিহাসের পাতায় যুগান্তকারী এক অধ‍্যায় হয়ে থাকবে।ইতিহাসের অনন‍্য অধ‍্যায় হিসেবে অনেক ফ‍্যাসিস্ট/স্বৈরাচারের নামের সাথে শেখ হাসিনার নামও ঘৃণাভরে উচ্চারিত হবে যেমন হয়ে থাকে ইতালীর বেনিটো মুসোলিনি, জার্মানির এডলফ হিটলার, স্পেনের ফ্রান্সিসকো ফ্রান্সে, বেলারুশের আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর নাম। ইতিহাস স্বাক্ষী দেয় ইংরেজ রাজা প্রথম চার্লসের অন‍্যায় অত‍্যাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে ক্ষমতায় আসে তৎকালীন ইংরেজ জাতির গনতন্ত্রকামী নেতা অলিভার ক্রমওয়েল। ক্ষমতায় এসে স্বৈরাচার প্রথম চার্লসকে ১৯৪৯ সালে মৃত‍্যুদন্ড দেয় এবং তা কার্যকর করে। এরপর নিজেই হয়ে উঠে বেপরোয়া খুনী, শুরু করে আয়ারল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডে ক্যাথলিকদের গণহত্যা। অলিভার ক্রমওয়েলের মৃত‍্যুটা স্বাভাবিক হলেও রাজা দ্বিতীয় চার্লস ক্ষমতায় এসে অলিভার ক্রমওয়েলের পঁচাগলা মৃতদেহ কবর থেকে তুলে এনে ১৬৬১ সালের ৩০ জানুয়ারি প্রকাশ‍্য জনসমক্ষে তার দুই সঙ্গী হেনরি আয়ারটন আর জন ব্র্যাডশকে সহ ফাঁসিতে ঝুলান। এরপর অলিভার ক্রমওয়েলের পঁচাগলা দেহ থেকে মস্তিস্ক বিচ্ছিন্ন করে শরীরটিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কবরে, আর প্রকাশ্যে রাস্তায় ঝুলিয়ে রাখা হয় শুধুমাত্র অলিভার ক্রমওয়েলের কাটা মুন্ডু। তারপর একটা লৌহদণ্ড মাথার মধ্যে লম্বালম্বি করে ঢুকিয়ে, চেনে বেঁধে ওয়েস্টমিনস্টারে রেখে দেওয়া হয় বিশ বছর। এর প্রায় চারশ’ বছর পর ১৯৬০ সালের ২৫ মার্চ ক‍্যামব্রিজ শহরের সাসেক্স কলেজের গেটে সেই মুন্ডুটি সমাধিস্ত করা হয় ইতিহাসের এক অমোঘ পাঠ দেওয়ার জন‍্য।হাসিনার বিচারের ক্ষেত্রে রাস্ট্র অতটা নিষ্ঠুর হবে না, অতটা অমানবিক হবে না, আইনে প্রদত্ত সর্বোচ্চ সাজা প্রদান করা হলেও এ রাস্ট্র অতটা নির্মমতায় পরিপুস্ঠ হবে না বলে আমি বিশ্বাস করি।

 

মাধবী,

পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসে যুগেযুগে অসংখ‍্য স্বৈরাচার এসেছে। যেমন রোমের শাসক টারকুইন দ্যা প্রাউড, অগাস্টাস, ক্যালিগুলা, এগ্রিপ্নিন, নিরো, ডোমিতিয়ান, সামোসের পলিক্রেতিস , মেসেডোনিয়ার আলেক্সান্ডার দ্যা গ্রেট, চীনের চি’ন শিহ-হাং-তি, উ হোউ, রাশিয়ার সেন্ট ওলাগা, বরিস গোদুনভ, পিটার দ‍্যা গ্রেট, ক‍্যাথেরিন দ‍্যা গ্রেট, প্রথম পল, জোসেফ স্ট‍্যালিন, ফ্রান্সের রাজা ষোড়ষ লুই, মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব, মঙ্গোলিয়ার চেঙ্গিস খান, সমরখন্দের তামেরলেন, জাপানের তোয়োতোমি হিডেয়োশি, পারস‍্যের সম্রাট নাদির শাহ, মেক্সিকোর অগাস্টিন দ‍্যা ইতুরবাইদ, পরিফিরিও ডায়াজ , আর্জেন্টিনার জুয়ান ম্যানুয়েল দ্যা রোজেস, জুয়ান পেরোন, কিউবার বাতিস্তা, চিলির অগাস্টো পিনোচেট, উত্তর কোরিয়ার কিম ইল সাং, ফিলিপাইনের মার্কোস, ইন্দোনেশিয়ার আহমদ সুকর্ণ, উগান্ডার ইদি আমিন, জিম্বাবুয়ের রবার্ট মুগাবে এবং বাংলাদেশের হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ! এদের সবাইকে ছাড়িয়ে ইতিহাসের খলনায়িকার জায়গা করে নিয়েছে শেখ হাসিনা ওয়াজেদ! আগামীকাল তার বিচার হবে বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে, ইতিহাসের কাঠগড়ায় তার বিচার হবে। আমরা অধীর আগ্রহ নিয়ে গোটা বিশ্বের মানুষের সাথে তার বিচার দেখবো।

 

মাধবী,

আজ দেশের উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। তোমাকে মনে পড়ছে, তোমার কথা মনে পড়ছে। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর নীরাকে ‘দাঁড়িয়ে রয়েছো তুমি’ কবিতায় যেভাবে বলেছিলো সেভাবে তোমার চোখে চোখ রেখে বলতে ইচ্ছে করছে, ‘‍্তুমি তো আমারই শুধু, দূর থেকে দেখা শুকনো চুল, ভিজে মুখ, করতলে মসৃণ চিবুক! তুমি নীরা, অহংকার তোমাকে মানায় না!’

ভালো থেকো প্রাণের মাধবী, আমার অতল অতলের গভীর গহীণ অরণ‍্য বানিয়ে ভালো থেকো, ভালোবাসার অনন্ত পিপাসার সরোবর হয়ে ভালো থেকো মাধবী!

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

শেরপুরে জমি বেদখলের চেষ্টা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ

অ্যাটর্নি জেনারেল  মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ  আইনজীবী এবং রাজনৈতিক কর্মী 

Update Time : ০১:১৫:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫

 

 

০২ আগস্ট, ২০২৫।

মাধবী,

তোমাকে না দেখার সাধ মিটাবো কি করে? তুমি দিনে দিনে আমার দৃষ্টির সীমানা পেরোচ্ছো, আমার অধরা হয়ে নিমিষে মিলাও, আমার কল্পনার অলিন্দেই শুধু উপেক্ষার প্রহর বুনো! এভাবে কতটা রক্তক্ষরণ হয় জানো? গত ২৪ জুলাই, ২০২৫ তারিখ, বৃহস্পতিবার , ঢাকা থেকে যুক্তরাজ্যে আসার সময় মনে হয়েছিলো তোমার শহরে তোমার জন‍্য বিশুদ্ধ বাতাস রেখে গেলাম। টার্কিশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি প্রায় দুই ঘন্টার মতো দেরীতে উড়াল দেয়, প্রতিটি মূহুর্তেই তোমার জন‍্য রাশি রাশি স্বাধীনতার ফুল ছড়িয়েছিলাম, বিশুদ্ধতার সুবাস রেখেছিলাম, সুশোভন এক শহরের উপপাদ্য রেখে এসেছিলাম। ঢাকা থেকে দেরীতে ফ্লাইট ছাড়ার কারনে ইস্তাম্বুলে কানেকটিং ফ্লাইট মিস করেছিলাম, ইস্তাম্বুল থেকে বার্মিংহামের পরবর্তী ফ্লাইট প্রায় ২০ ঘন্টা পরে ছিলো। অগত‍্যা ৫ ঘন্টা পর লন্ডনের ফ্লাইট ধরলাম। রাত নয়টা নাগাদ পৌঁছলাম লন্ডনের হিথ্রো বিমান বন্দরে, বের হওয়ার পর স্নেহের তুহিন এবং শাহীনকে পেলাম, ওরা দুই ভাই, আমাদের প্রিয় শিক্ষক ফরিদ স‍্যারের দুইজন সুযোগ্য পুত্র। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তুহিনের বাসায় গেলাম, যেতে দেখি তুহিনের বৌ লিপি, আমার অনেক পছন্দের মানুষ, আতিথেয়তায় অনন্যা, অদ্বিতীয়া, দেশী স্টাইলে সব রান্না করে টেবিল সাজিয়ে রেখেছে। সবগুলো খাবারই এতটাই লোভনীয় ছিলো যে, গোগ্রাসে খেয়ে ফেললাম। এরপর ঐ রাতেই শাহীন-তুহিনকে সঙ্গে নিয়ে নটিংহাম শহরে এসে যখন পৌঁছায় তখন ঘড়ির কাঁটায় ২টা নয় মিনিট! এতো হৈ রৈ, এত সমারোহের মাঝেও তুমি অনন্য মাধবী হয়ে আমার কল্পনায় গ্রীবা উঁচু করে চারিদিকে ঘুরে ঘুরে প্রণতি জানিয়েছো। এবারের ভ্রমনে উত্তর ওয়েলস এর লনডুনডু শহরে সোহাগ-টফি দম্পতির আন্তরিক অভ‍্যর্থনা, ওদের বাচ্চাদের সাহচার্য আর শাওন সাহেবের উইটি আলোচনা আমার সময়কে আনন্দময় করে তুলেছিল! সব কিছুর মাঝেই তুমি এসেছিলে আমার স্বপ্ন সারথী হয়ে! এতোটা জ্বালাও কেনো মাধবী? মায়া লাগে না তোমার? পিশাচও তো মাঝে মাঝে মানবী হয়, তুমিও তো কোন এক নিরালা দুপুর কিংবা রাত্রি দ্বিপ্রহরে হতে পারো প্রেমের দেবী, পারো না তুমি?

 

মাধবী,

আগামীকাল বাংলাদেশের ইতিহাসে মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে একজন ফ‍্যাসিস্ট এবং তাঁর প্রধানতম সহযোগীদের ঐতিহাসিক বিচার শুরু হতে যাচ্ছে। নিঃসন্দেহে এই বিচার ইতিহাসের পাতায় যুগান্তকারী এক অধ‍্যায় হয়ে থাকবে।ইতিহাসের অনন‍্য অধ‍্যায় হিসেবে অনেক ফ‍্যাসিস্ট/স্বৈরাচারের নামের সাথে শেখ হাসিনার নামও ঘৃণাভরে উচ্চারিত হবে যেমন হয়ে থাকে ইতালীর বেনিটো মুসোলিনি, জার্মানির এডলফ হিটলার, স্পেনের ফ্রান্সিসকো ফ্রান্সে, বেলারুশের আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর নাম। ইতিহাস স্বাক্ষী দেয় ইংরেজ রাজা প্রথম চার্লসের অন‍্যায় অত‍্যাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে ক্ষমতায় আসে তৎকালীন ইংরেজ জাতির গনতন্ত্রকামী নেতা অলিভার ক্রমওয়েল। ক্ষমতায় এসে স্বৈরাচার প্রথম চার্লসকে ১৯৪৯ সালে মৃত‍্যুদন্ড দেয় এবং তা কার্যকর করে। এরপর নিজেই হয়ে উঠে বেপরোয়া খুনী, শুরু করে আয়ারল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডে ক্যাথলিকদের গণহত্যা। অলিভার ক্রমওয়েলের মৃত‍্যুটা স্বাভাবিক হলেও রাজা দ্বিতীয় চার্লস ক্ষমতায় এসে অলিভার ক্রমওয়েলের পঁচাগলা মৃতদেহ কবর থেকে তুলে এনে ১৬৬১ সালের ৩০ জানুয়ারি প্রকাশ‍্য জনসমক্ষে তার দুই সঙ্গী হেনরি আয়ারটন আর জন ব্র্যাডশকে সহ ফাঁসিতে ঝুলান। এরপর অলিভার ক্রমওয়েলের পঁচাগলা দেহ থেকে মস্তিস্ক বিচ্ছিন্ন করে শরীরটিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কবরে, আর প্রকাশ্যে রাস্তায় ঝুলিয়ে রাখা হয় শুধুমাত্র অলিভার ক্রমওয়েলের কাটা মুন্ডু। তারপর একটা লৌহদণ্ড মাথার মধ্যে লম্বালম্বি করে ঢুকিয়ে, চেনে বেঁধে ওয়েস্টমিনস্টারে রেখে দেওয়া হয় বিশ বছর। এর প্রায় চারশ’ বছর পর ১৯৬০ সালের ২৫ মার্চ ক‍্যামব্রিজ শহরের সাসেক্স কলেজের গেটে সেই মুন্ডুটি সমাধিস্ত করা হয় ইতিহাসের এক অমোঘ পাঠ দেওয়ার জন‍্য।হাসিনার বিচারের ক্ষেত্রে রাস্ট্র অতটা নিষ্ঠুর হবে না, অতটা অমানবিক হবে না, আইনে প্রদত্ত সর্বোচ্চ সাজা প্রদান করা হলেও এ রাস্ট্র অতটা নির্মমতায় পরিপুস্ঠ হবে না বলে আমি বিশ্বাস করি।

 

মাধবী,

পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসে যুগেযুগে অসংখ‍্য স্বৈরাচার এসেছে। যেমন রোমের শাসক টারকুইন দ্যা প্রাউড, অগাস্টাস, ক্যালিগুলা, এগ্রিপ্নিন, নিরো, ডোমিতিয়ান, সামোসের পলিক্রেতিস , মেসেডোনিয়ার আলেক্সান্ডার দ্যা গ্রেট, চীনের চি’ন শিহ-হাং-তি, উ হোউ, রাশিয়ার সেন্ট ওলাগা, বরিস গোদুনভ, পিটার দ‍্যা গ্রেট, ক‍্যাথেরিন দ‍্যা গ্রেট, প্রথম পল, জোসেফ স্ট‍্যালিন, ফ্রান্সের রাজা ষোড়ষ লুই, মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব, মঙ্গোলিয়ার চেঙ্গিস খান, সমরখন্দের তামেরলেন, জাপানের তোয়োতোমি হিডেয়োশি, পারস‍্যের সম্রাট নাদির শাহ, মেক্সিকোর অগাস্টিন দ‍্যা ইতুরবাইদ, পরিফিরিও ডায়াজ , আর্জেন্টিনার জুয়ান ম্যানুয়েল দ্যা রোজেস, জুয়ান পেরোন, কিউবার বাতিস্তা, চিলির অগাস্টো পিনোচেট, উত্তর কোরিয়ার কিম ইল সাং, ফিলিপাইনের মার্কোস, ইন্দোনেশিয়ার আহমদ সুকর্ণ, উগান্ডার ইদি আমিন, জিম্বাবুয়ের রবার্ট মুগাবে এবং বাংলাদেশের হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ! এদের সবাইকে ছাড়িয়ে ইতিহাসের খলনায়িকার জায়গা করে নিয়েছে শেখ হাসিনা ওয়াজেদ! আগামীকাল তার বিচার হবে বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে, ইতিহাসের কাঠগড়ায় তার বিচার হবে। আমরা অধীর আগ্রহ নিয়ে গোটা বিশ্বের মানুষের সাথে তার বিচার দেখবো।

 

মাধবী,

আজ দেশের উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। তোমাকে মনে পড়ছে, তোমার কথা মনে পড়ছে। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর নীরাকে ‘দাঁড়িয়ে রয়েছো তুমি’ কবিতায় যেভাবে বলেছিলো সেভাবে তোমার চোখে চোখ রেখে বলতে ইচ্ছে করছে, ‘‍্তুমি তো আমারই শুধু, দূর থেকে দেখা শুকনো চুল, ভিজে মুখ, করতলে মসৃণ চিবুক! তুমি নীরা, অহংকার তোমাকে মানায় না!’

ভালো থেকো প্রাণের মাধবী, আমার অতল অতলের গভীর গহীণ অরণ‍্য বানিয়ে ভালো থেকো, ভালোবাসার অনন্ত পিপাসার সরোবর হয়ে ভালো থেকো মাধবী!