Dhaka ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কালিয়াকৈরে ন্যায় বিচারের আশ্বাসে  দু-সন্তানের জননীকে নেতার কু-প্রস্তাব

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ধারে ধারে ঘুরে বিচার না পেয়ে ৩/৪ মাস ধরে ঘর ছাড়া অসহায় দুই সন্তানের এক জননী। এদিকে এসব বিষয়ে ন্যায় বিচারের আশ্বাসে দিয়ে স্থানীয় বিএনপির এক নেতা ওই জননীকে কুপ্রস্তাব দিয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কালিয়াকৈর মডেল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলেন ভুক্তভোগী ওই নারী।
ভুক্তভোগী ওই জননী, সংবাদ সম্মেলন ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার খিলপাড়া এলাকার মৃত চান মিয়ার ছেলে সোহরাফ হোসেনের সঙ্গে দীর্ঘদিন আগে পাশ্ববর্তী শ্রীপুর উপজেলার বাশঁবাড়ী এলাকার দানেছ আলীর মেয়ে মাফিয়া আক্তারের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসার জীবনে মিলন হোসেন (১৭) ও সাত বছরের রায়হান হোসেন নামে দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। গত ২০১৮ সালে বিদেশ যাওয়ার কথা বলে মাফিয়ার বাবার বাড়ি থেকে আড়াই লক্ষ টাকা নেন স্বামী সোহরাফ। তিনি  প্রায় দুই বছর আগে বিদেশ থেকে ফিরে স্ত্রী মাফিয়ার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। সর্বশেষ তাকে মারধর করলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি গ্রাম্য শালিসে বসলেও উপজেলা বিএনপির আহব্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ সাব্বীর আহম্মেদ কছিমের প্রভাবে তা পন্ড হয়ে যায়। পরে বিএনপির ওই নেতা ন্যায় বিচার করে দেওয়ার কথা বলে দুই সন্তানের ওই জননীকে কু-প্রস্তাব দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি ওই নারীকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখান ও তার স্বামীকে দিয়ে সন্তানসহ তাকে ঘর থেকে বের করে দেন। এরপর ওই ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দেয়। তাদের ভয়ে গত ৩/৪ মাস ধরে দুই সন্তান নিয়ে ওই নারী অন্যত্র থাকেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কালিয়াকৈর মডেল প্রেসক্লাবে এসে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই নারী মাফিয়া। এ সময় তিনি এসব অভিযোগ তুলে তিনি তার সন্তান নিয়ে স্বামীর ঘরে ফেরার অকুতি জানান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কালিয়াকৈর মডেল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলেন ভুক্তভোগী ওই নারী।
ভুক্তভোগী ওই নারী মাফিয়া আক্তার জানান, আমাদের স্বামী-স্ত্রীর কলোহের বিষয়টি মিমাংসার জন্য বিএনপির ওই নেতার হাতে-পায়ে ধরেছি। কিন্তু তিনি মিমাংসার কথা বলে আমাকে কু-প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হলে তিনি ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার স্বামীকে দিয়ে আমাকে তাড়িয়ে দেয়। আমাদের শুধু তাড়িয়েই দেননি, স্বামী ও বিএনপির নেতা কছিম বলছেন আমাকে তালাক দিয়েছেন। কিন্তু তালাকের কোনো কাগজ আমি পাইনি। তবে এখন দুই ছেলে নিয়ে আমি ঘর ছাড়া আছি। যেখানে ভাড়া থাকি সেখানে হুমকি দিচ্ছে ওই বিএনপির নেতা।
অভিযুক্ত ওই নারীর স্বামী সোহরাফ হোসেন জানান, তাকে তালাক দিয়েছি। ওই কাগজ মাতাব্বরদের কাছে আছে।
অপর অভিযুক্ত উপজেলা বিএনপির আহব্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ সাব্বীর আহম্মেদ কছিম জানান, তাকে কু-প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন। তবে আমার প্রতিপক্ষ আমাকে হেয় করার জন্য ওই নারীকে দিয়ে মিথ্যা বলাচ্ছেন।
এব্যাপারে স্থানীয় ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক রফিকুল ইসলাম জানান, ওই নারী অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে গ্রাম্য আদালতের পক্ষ থেকে দুই পক্ষকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

শেরপুরে জমি বেদখলের চেষ্টা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ

কালিয়াকৈরে ন্যায় বিচারের আশ্বাসে  দু-সন্তানের জননীকে নেতার কু-প্রস্তাব

Update Time : ১১:১৫:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ধারে ধারে ঘুরে বিচার না পেয়ে ৩/৪ মাস ধরে ঘর ছাড়া অসহায় দুই সন্তানের এক জননী। এদিকে এসব বিষয়ে ন্যায় বিচারের আশ্বাসে দিয়ে স্থানীয় বিএনপির এক নেতা ওই জননীকে কুপ্রস্তাব দিয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কালিয়াকৈর মডেল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলেন ভুক্তভোগী ওই নারী।
ভুক্তভোগী ওই জননী, সংবাদ সম্মেলন ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার খিলপাড়া এলাকার মৃত চান মিয়ার ছেলে সোহরাফ হোসেনের সঙ্গে দীর্ঘদিন আগে পাশ্ববর্তী শ্রীপুর উপজেলার বাশঁবাড়ী এলাকার দানেছ আলীর মেয়ে মাফিয়া আক্তারের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসার জীবনে মিলন হোসেন (১৭) ও সাত বছরের রায়হান হোসেন নামে দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। গত ২০১৮ সালে বিদেশ যাওয়ার কথা বলে মাফিয়ার বাবার বাড়ি থেকে আড়াই লক্ষ টাকা নেন স্বামী সোহরাফ। তিনি  প্রায় দুই বছর আগে বিদেশ থেকে ফিরে স্ত্রী মাফিয়ার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। সর্বশেষ তাকে মারধর করলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি গ্রাম্য শালিসে বসলেও উপজেলা বিএনপির আহব্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ সাব্বীর আহম্মেদ কছিমের প্রভাবে তা পন্ড হয়ে যায়। পরে বিএনপির ওই নেতা ন্যায় বিচার করে দেওয়ার কথা বলে দুই সন্তানের ওই জননীকে কু-প্রস্তাব দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি ওই নারীকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখান ও তার স্বামীকে দিয়ে সন্তানসহ তাকে ঘর থেকে বের করে দেন। এরপর ওই ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দেয়। তাদের ভয়ে গত ৩/৪ মাস ধরে দুই সন্তান নিয়ে ওই নারী অন্যত্র থাকেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কালিয়াকৈর মডেল প্রেসক্লাবে এসে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই নারী মাফিয়া। এ সময় তিনি এসব অভিযোগ তুলে তিনি তার সন্তান নিয়ে স্বামীর ঘরে ফেরার অকুতি জানান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কালিয়াকৈর মডেল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলেন ভুক্তভোগী ওই নারী।
ভুক্তভোগী ওই নারী মাফিয়া আক্তার জানান, আমাদের স্বামী-স্ত্রীর কলোহের বিষয়টি মিমাংসার জন্য বিএনপির ওই নেতার হাতে-পায়ে ধরেছি। কিন্তু তিনি মিমাংসার কথা বলে আমাকে কু-প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হলে তিনি ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার স্বামীকে দিয়ে আমাকে তাড়িয়ে দেয়। আমাদের শুধু তাড়িয়েই দেননি, স্বামী ও বিএনপির নেতা কছিম বলছেন আমাকে তালাক দিয়েছেন। কিন্তু তালাকের কোনো কাগজ আমি পাইনি। তবে এখন দুই ছেলে নিয়ে আমি ঘর ছাড়া আছি। যেখানে ভাড়া থাকি সেখানে হুমকি দিচ্ছে ওই বিএনপির নেতা।
অভিযুক্ত ওই নারীর স্বামী সোহরাফ হোসেন জানান, তাকে তালাক দিয়েছি। ওই কাগজ মাতাব্বরদের কাছে আছে।
অপর অভিযুক্ত উপজেলা বিএনপির আহব্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ সাব্বীর আহম্মেদ কছিম জানান, তাকে কু-প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন। তবে আমার প্রতিপক্ষ আমাকে হেয় করার জন্য ওই নারীকে দিয়ে মিথ্যা বলাচ্ছেন।
এব্যাপারে স্থানীয় ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক রফিকুল ইসলাম জানান, ওই নারী অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে গ্রাম্য আদালতের পক্ষ থেকে দুই পক্ষকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।