ছাত্রজীবনে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বিনা টিকিটে বহুবার ট্রেনে চড়ে সিনেমা দেখতে,বহু জায়গায় ভ্রমন করছেন ফ্রি টিকেটে । ফিরতি পথও টাকা দিত না। সময় গড়িয়েছে বহু বছর , পড়াশোনা শেষে চাকরিও পেয়েছেন। চাকুরী শেষে অবসর গ্রহণও করেছেন।তবে হৃদয়ের কোণে একটা অপরাধবোধ জমে ছিল বহুদিন চুরি করে ট্রেন ভ্রমণের দায়।
অবশেষে সেই দায় থেকে মুক্তি পেলেন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ পৌর শহরের সাবেক কাস্টম ইন্সপেক্টর ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আতাউর রহমান (৬৮)। প্রায় ৩০ বছর আগের সেই ভাড়া পরিশোধ করতে সোমবার (২৫ আগস্ট) দিবাগত রাতে বগুড়া রেলষ্টেশনে গিয়ে ২হাজার টাকা দিয়ে দায়মুক্তি নেন তিনি।
বগুড়া রেলষ্টেশন মাস্টার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “আতাউর রহমান অনেক দিন ধরেই ছাত্রজীবনের সেই বিনা টিকিট ভ্রমণের ভাড়া পরিশোধ করতে চাইছিলেন। কিন্তু সুযোগ হচ্ছিল না। ওই রাতে ষ্টেশনে তার সঙ্গে দেখা হলে তিনি নিজেই বিষয়টি জানান এবং অনুরোধ করেন টিকিট কাটার ব্যবস্থা করার জন্য।
প্রথমে ঠিক বোঝা যাচ্ছিল না কত টাকা নেওয়া হবে। পরে ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে পরামর্শ করে সর্বোচ্চ ভাড়া ২০০০৳(দুই হাজার) টাকা নির্ধারণ করা হয়, যা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।
সাবেক কাস্টম ইন্সপেক্টর আতাউর রহমান বলেন, “ছাত্রজীবনে বুঝতাম না, আবার টাকাও ছিল না। ট্রেনে বিনা টিকিটে বগুড়া বা গাইবান্ধায় সিনেমা দেখতে যেতাম। তবে চাকরী পাওয়ার পর থেকেই একটা অপরাধবোধ তৈরি হয়েছিল। ঠিক করেছিলাম, সুযোগ পেলে সেই ভাড়া ফেরৎ দিবো। আলহামদুলিল্লাহ, আজ সেটা করে ফেলেছি। সত্যি অনেক হালকা লাগছে।
তিনি আরও বলেন, “যারা ছোটবেলায় না বুঝে বা অভাবের কারণে বিনা টিকিটে ট্রেনভ্রমণ করেছেন, তারা যদি এখন স্বচ্ছল হন, তাহলে অন্তত একবার সেই ভাড়া পরিশোধ করে আসা উচিত। এতে মনেও শান্তি আসবে, দায়িত্ববোধও তৈরি হবে।”