জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ–বকশীগঞ্জ) আসনকে কেন্দ্র করে বিএনপি’র ভেতরে দ্বন্দ্ব ক্রমেই প্রকট হয়ে উঠছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে কেন্দ্রীয় বিএনপি’র দুই হেভিওয়েট নেতা সাবেক এমপি ও কেন্দ্মটির কোষাধ্যক্ষ এম. রশিদুজ্জামান মিল্লাত এবং সাবেক আইজিপি, বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাইয়ুমকে ঘিরে বকশীগঞ্জে সৃষ্টি হয়েছে দুটি গ্রুপ।
দুই গ্রুপের অবস্থান…
মিল্লাতপন্থী গ্রুপে রয়েছেন দলীয় পদ-পদবি পাওয়া স্থানীয় নেতারা। তারা মনে করছেন, সাবেক সংসদ সদস্য হিসেবে মিল্লাতের জনপ্রিয়তা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তাকে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রাখবে। অপরদিকে পদবঞ্চিত ও সাবেক নেতাকর্মীরা একজোট হয়েছেন আব্দুল কাইয়ুমের নেতৃত্বে। তাদের দাবি, দীর্ঘ প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা, মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় ও ক্লিন ইমেজের কারণে কাইয়ুমই এলাকায় গ্রহণযোগ্য প্রার্থী।
কর্মসূচি ঘোষণা…
এই অবস্থায় নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের জন্য দুই পক্ষই আলাদা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। কাইয়ুম গ্রুপ আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর বকশীগঞ্জ নূর মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কর্মী সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন সাবেক আইজিপি আব্দুল কাইয়ুম। অপরদিকে মিল্লাত গ্রুপও পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে ১৪ সেপ্টেম্বর খয়ের উদ্দিন মাদরাসা মাঠে কর্মী সমাবেশ আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
উত্তেজনা বৃদ্ধি…
সমাবেশকে ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সমর্থকরা চ্যালেঞ্জ–পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছেন। মিল্লাত গ্রুপ অভিযোগ করেছে, উপজেলা বিএনপিকে পাশ কাটিয়ে সমাবেশ আয়োজন করা হলে তা মেনে নেওয়া হবে না। অন্যদিকে কাইয়ুম গ্রুপ বলছে, তাদের কর্মসূচি পূর্ব ঘোষিত এবং সেটিই অনুষ্ঠিত হবে।
স্থানীয়দের মতামত…
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে এ ধরনের বিভক্তি বিএনপি’র জন্য বড় সংকট তৈরি করতে পারে। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে, যা ভবিষ্যতে নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণে দলের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
বর্তমানে বকশীগঞ্জে বিএনপি’র রাজনীতি মূলত দুই শীর্ষ নেতার সমর্থক গ্রুপে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। তাদের কর্মী সমাবেশগুলো কেবল শক্তি প্রদর্শনের ক্ষেত্রেই নয়, আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন নির্ধারণেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।