গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বুধবার সকালে বনের জমিতে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে গেলে বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দখলদারদের মধ্যে চরম উত্তেজনার মধ্যে বাধার সৃষ্টি করা হয়েছে । এতে উচ্ছেদের আগেই ক্ষিপ্ত হয়ে বনের এক পেশাদার দালালের মোটরসাইকেল আগুন জালিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে অবৈধ দখলদাররা।
এলাকাবাসী ও বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা বিট অফিসের আওতায় বিভিন্ন এলাকায় বন বিভাগের জমিতে প্রতিনিয়ত দেদারচ্ছে উঠছে নতুন নতুন অবৈধ স্থাপনা। স্থানীয় বন অফিসের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দালাল চক্রের সঙ্গে যোগসাজোসের মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে এসব অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলছেন দখলদাররা। এসব অবৈধ স্থাপনার মাধ্যমে দালাল চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। অনেকেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি এসব অবৈধ স্থাপনার বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কে বা কাহারা ম্যাসেস পাঠায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে স্থানীয় বনবিভাগের লোকজন ও দালাল চক্র। এ কারণে বুধবার সকালে উপজেলার বিশ্বাসপাড়া এলাকায় উচ্ছেদ অভিযানে যান চন্দ্রা রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল করিমের নেতৃত্বে চন্দ্রা বিট কর্মকর্তা ইকবাল হোসেনসহ কয়েকজন কর্মচারী ও দালাল চক্র। এসময় বনের জমি দখলদার লাল মিয়াসহ কয়েকজনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের চেষ্টা করে। এসময় দখলদার লাল মিয়ার নেতৃত্বে কিছু দখলদাররা ক্ষিপ্ত হয়ে বন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দখলদারদের মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এসময় বনবিভাগের এক দালাল নাজমুল হাসানের মোটরসাইকেলটি আগুন জালিয়ে পুড়িয়ে দেয় ক্ষিপ্ত বনের দখলদাররা। এ ঘটনায় ওই মোটরসাইকেলের মালিক নাজমুল হাসান বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
ওই মোটরসাইকেলের মালিক নাজমুল হাসান জানান, বনবিভাগের লোকজন উচ্ছেদ অভিযান চালালে আমি পাশেই দাঁড়িয়ে দেখছিলাম। হঠাৎ তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার মোটরসাইকেলটি আগুন ধরিয়ে দেয় ও আমার উপর হামলা করে। তবে আমি বনবিভাগের দালাল নয়।
অভিযুক্ত বনের জমি দখলদার লাল মিয়া জানান, ওই এলাকার এরশাদ, নুর উদ্দিন আনসার, বাবুসহ কয়েকজন বনের গাছ কেটে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছেন। এ বিষয়ে কে বা কাহারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ম্যাসেস দিয়েছে। এ কারণে আমাকে সন্দেহ করে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের পুরোনো স্থাপনা ভাঙ্গতে গিয়েছিল। এতে স্থানীয় লোকজন দালালদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওই মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। তবে বনবিভাগের লোকজনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেনি।
এব্যাপারে চন্দ্রা বন বিট কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন জানান, অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের খবর পেয়ে আমরা ওই এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালায়। কিন্তু উচ্ছেদের আগেই দখলদাররা উত্তেজিত হয়ে উঠলে আমরা চলে আসি। সরকারী কাজে বাধা দেওয়াই আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে দালালদের সঙ্গে যোগসাজোসের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।