জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে অনুষ্ঠিত বিজয় র্যালি ও সমাবেশে জনতার ঢল নামে। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দিনব্যাপী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় পৃথক পৃথক র্যালি ও জনসভা। ঝিনাইগাতী সদর বাজার পরিণত হয় মিছিলের নগরীতে।
দিবসটি উদযাপন করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে র্যালি ও সমাবেশগুলো হয়ে উঠে প্রাণবন্ত ও গণমুখী।
দিনের শুরুতে ঝিনাইগাতী থানা মোড় চত্বরে নির্মিত ‘শহীদ সৌরভ’ এর নামফলক উন্মোচন করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম রাসেল। উপজেলা প্রশাসনের এই কর্মসূচি উপস্থিত জনতার মধ্যে আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি করে।
সকালে ঐতিহাসিক আমতলায় অনুষ্ঠিত হয় জামায়াতে ইসলামীর উপজেলা পর্যায়ের সমাবেশ। উপজেলা আমীর মাওলানা মো. নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি ফরহাদ হোসাইনের সঞ্চালনায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য, শেরপুর জেলা সেক্রেটারি ও শেরপুর-৩ আসনের মনোনীত প্রার্থী মো. নুরুজ্জামান বাদল।
দুপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ঝিনাইগাতী উপজেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাসুদ। সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা আতাউর রহমান আশরাফি’র সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, শেরপুর-৩ আসনের দলীয় প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মুফতি আবু তালেব মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
বিকেলে ধানহাটিতে উপজেলা বিএনপি’র আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও জনসভা। সভাপতিত্ব করেন, উপজেলা বিএনপি’র সাবেক আহ্বায়ক আলহাজ্ব মো. শাহজাহান আকন্দ। প্রধান অতিথি ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি মো. মাহমুদুল হক রুবেল।
এছাড়াও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মরহুম আব্দুস সালামের পুত্র, জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার তৌহিদুর রহমানের নেতৃত্বে বের হয় বিশাল শোভাযাত্রা। উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে তা হাসপাতালে গিয়ে শেষ হয়। সমাপ্তি বক্তব্যে তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট ও প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে আবেগঘন বক্তব্য রাখেন।
সমগ্র দিনব্যাপী এসব কর্মসূচিকে ঘিরে ঝিনাইগাতী বাজার ও আশপাশের এলাকা পরিণত হয় এক বিপুল জনসমাগমের মিলনমেলায়। সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি প্রমাণ করে, জনগণ গণতন্ত্র ও অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে এখনো সোচ্চার।